Site Links

Wednesday, February 24, 2016

মায়ের মর্যাদা..............

মায়ের মর্যাদা..............
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
একদা এক ব্যক্তি রাসুল (সা.) এর কাছে আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)!
আমার থেকে কোন ব্যক্তি সবচেয়ে বেশী সৌজন্যমূলক আচরণ পাওয়ার অধিকারী?
রাসুল (সা.) বললেন, তোমার ‘মা’।
লোকটি বলল, তারপর কে?
রাসুল (সা.) বললেন, তোমার ‘মা’।
লোকটু পুনরায় জানতে চাইলো তারপর কে?
রাসুল (সা.) বললেন, তোমার ‘মা’।
লোকটি আবারও জানতে চাইলো, তারপর কে? রাসুল (সা.) বললেন, তোমার ‘বাবা’।
(বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিম শরীফের আরেকটি বর্ণনায় আসছে, রাসুল (সা.) বললেন- তোমার মা, অতপর তোমার মা, অতপর তোমার মা, অতপর তোমার পিতা। তারপর তোমার নিকটতম আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধব পর্যায়ক্রমে তোমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকারী।
মেশকাত, হাদীস নং-৪৬৭১/১
ব্যাখ্যা ও শিক্ষাঃ হাদীসটির ব্যাখায় মোহাদ্দেসীনে কেরামগণ বলেন, মায়ের কথা তিনবার বলার কারণ হলো
১. মা তার সন্তানকে কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেন।
২. জীবনের ঝুকি নিয়ে সন্তানকে প্রসব করেন।
৩. চব্বিশটি মাস নিজের বুকের দুধ পান করান।
...........কেহ কেহ বলেছেন,
সন্তান তার মায়ের পেটে তিনটি পর্দার ভিতর থাকে এবং যখন মা তাকে প্রসব করেন তখন এ
তিনটি পর্দা ভেদ করে সে দুনিয়াতে আসে। এ জন্য মায়ের ক্ষেত্রে বেশী অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
হাদীসে আল্লাহর রাসুল (সা.) আরো বলেন.....‘‘মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের জান্নাত।”
মুসলিম শরীফের আরেকটি হাদীসে বলা হয়েছে... রাসুল (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে পেল অথবা তাদের যে কোন একজনকে বার্ধক্য অবস্থায় পেল, অথচ (খেদমত করে সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না, তার নাক ধুলায় মলিন হোক (অর্থাৎ সে ধ্বংস হোক)।”
অন্য জায়গায় রাসুল (সা.) মায়ের দিকে নেক নজরে তাকালে কবুল হজ্জের সাওয়াবের কথা বলেছেন।
এমনকি সন্তান যদি প্রতিদিন একশতবার মায়ের দিকে নেক নজরে সাওয়াবের আশায় তাকায়,
আল্লাহ তাকে একশত হজ্জের সাওয়াব দান করবেন বলা হয়েছে।
অথচ বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করা যায় সাধারণ ব্যাপারে সন্তান তার বাবা-মাকে কষ্ট দেয়।
বাবা-মায়ের উপর তার স্ত্রী বা সন্তানদেরকে অগ্রাধিকার দেয়। স্ত্রীর অধিকার কিংবা সন্তানের
অধিকার বা হক সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। আজ যদি আমি আমার বাবা-মাকে সম্মান না করি,
তাদের চাওয়া-পাওয়া পূর্ণ না করি, তাহলে কিভাবে আমি আমার সন্তানের কাছ থেকে একসময়
এমন ব্যবহার পাওয়ার আশা করতে পারি?
আজ আমি আমার সন্তানকে নিজে না খেয়ে তাকে খাওয়াই,
দিন-রাত পরিশ্রমের মাধ্যমে সন্তানের যত্ন নেই, সন্তানের একটু অসুখ করলে নিজের
ঘুম হারাম করে তার সেবা করি, সন্তানের একটু মুখের হাসি আমার মনে প্রশান্তি এনে দেয়,
তাহলে আমরা কেন একটু চিন্তা করি না যে, আমরাও একসময় ছোট ছিলাম। আমাদেরকে আমাদের বাব-মা এভাবে বা এর চেয়েও বেশী আদর, স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালবাসা দিয়ে,
আর বিভিন্ন রকম ত্যাগ স্বীকার আর দুখ-কষ্ট সহ্য করে বড় করেছেন।
কেন তাদের ব্যাপারে একটু চিন্তা করি না? কেন? কেন? কেন?
আমরা এগুলো অনকে জানি কিন্তু সিবের মোহে যেন মানতে চাইনা বা মানতে পারি না।
তাই আসুন, আজ থেকে প্রতিজ্ঞাব্ধ হই, কোন অবস্থাতেই পিতা মাতার অবাধ্য হবো না। কারন,
পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া কবীরা গুণাহ। তাদের সকল কথাগুলো আমরা যথাসাধ্য
পালন করার চেষ্টা করব। ইনশাআল্লাহ!!!
আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের পিতা-মাতার খেদমত করে সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) এর ভালবাসা পাওয়ার ও চুড়ান্ত গন্তব্যস্থল জান্নাত লাভের তাওফীক দান করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment